Saturday, May 12, 2018

প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু সম্পর্কিত ৫টি রহস্যময় তথ্য



প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু সম্পর্কিত ৫টি রহস্যময় তথ্য

১: দুর্ঘটনাস্থলে যান চলাচল সচল করে দেয়া এবং তীব্র উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি প্যারিসের যেই টানেলে প্রিন্সেস ডায়ানার গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পরেছিলো, সেই স্থান দূর্ঘটনার কয়েকঘন্টা পরেই পরিষ্কার করে যান চলাচল সচল করে দেয়া হয়। প্যারিসের স্থানীয় সময় রাত বারোটার কিছু পরে আ্যক্সিডেন্ট হয়েছিলো এবং ভোরের আলো ফোটার আগেই সেই টানেল ধুয়ে মুছে চকচকে করে সাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। তদন্তকারী অফিসারদের  ভাষ্যমতে, প্রয়োজনীয় সকল তথ্যপ্রমাণ তারা সংগ্রহ করেছেন। তাই অকারণে তারা রাস্তা আটকে রেখে চলাচলের ব্যঘাত ঘটাতে চাননি। অনেক গবেষকের মতে, এত তাড়াতাড়ি রাস্তা খুলে দেয়ার মানে এও হতে পারে যে, দুর্ঘটনাস্থলে কোন তদন্তই করা হয়নি। প্রিন্সেস ডায়ানা এবং দোদি আল-ফায়েদ এর মত মানুষেরা যেখানে নিহত, এত তাড়াতাড়ি কি করে তদন্ত শেষ হওয়া সম্ভব?দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাক্ষীদের মতে, যে মুহুর্তে হেনরি পল চালিত প্রিন্সেস ডায়ানার মার্সিডিজ গাড়িটি টানেলে প্রবেশ করতে নেয়, ঠিক সেই মুহূর্তে টানেলের প্রবেশপথে একটি তীব্র উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি দেখা যায়। সেই আলোতে উপস্থিত সকলের চোখ ধাঁধিয়ে গেছিলো। এবং এই উজ্জ্বল আলোর কারণেই প্রিন্সেসের গাড়ির ড্রাইভার হেনরি পল গাড়ির উপর তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং টানেলের ১৩ নম্বর পিলারের সাথে গাড়িটির সংঘর্ষ হয়। তদন্তকারী অফিসারগণ এই উজ্জ্বল আলোর উৎস খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। অন্ধকার টানেলে আচমকা তীব্র আলো, রহস্যময় নয় কি?২: আ্যম্বুলেন্সের ধীরগতি এবং মেডিকেল টিমের অবহেলা আ্যক্সিডেন্টের কিছুক্ষণ পর ফায়ারব্রিগেড টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তাদের সাথে দুজন ছিলো মেডিক্যালি ট্রেইনড। তারা দেখতে পান যে দোদি আল ফায়েদ এবং হেনরি পল মৃত। প্রিন্সেস গাড়ির যে পাশে ছিলেন সে পাশ তেমন ক্ষতিগ্রস্ত ও ছিলো। প্রিন্সেস ছিলেন স্বাভাবিক। তিনি বসে ছিলেন মেঝেতে আর তার পা ছিলো গাড়ির পেছনের সিটে। তিনি হাত পা নাড়ছিলেন। তিনি ফায়ার ব্রিগেডের লোকজনের সাথে কথাও বলেন। এর বেশ কিছুক্ষণ পর উপস্থিত হন ডক্টর জিন মার্কো মার্টিনো এবং তার মেডিকেল টিম। তারা প্রিন্সেসের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। এবং বেশ কিছু সময় পর তারা প্রিন্সেসকে নিয়ে আ্যম্বুলেন্সে উঠেন। প্রিন্সেস ডায়ানা বিনা চিকিৎসায় দুর্ঘটনাস্থলে ৮১ মিনিট যাবত ছিলেন। তারপর তাকে সেখান থেকে আ্যম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়। শুধু তাই নয়, আ্যম্বুলেন্স যখন প্রিন্সেসকে নিয়ে রওনা হয়, তখন আ্যম্বুলেন্সের স্পিড ছিলো মাত্র ১৯ কিলোমিটার পার আওয়ার। অথচ ফ্রান্সে আ্যম্বুলেন্সের স্পিড লিমিট ৬০/৭০ কি.মি. পার আওয়ার। কচ্ছপের গতিতে আ্যম্বুলেন্সের চলার উপরেও বারবার প্রশ্ন করা হয়েছে। প্রশ্নবাণ ছোড়া হয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের উপর। ডক্টর জিন মার্টিনোর মতে, সেই অত্যাধুনিক আ্যম্বুলেন্সের ভেতরেই তৎক্ষণাৎভাবে প্রিন্সেসের চিকিৎসা শুরু করে দিয়েছিলেন, যার কারণে ধীরগতিতে চলছিলো আ্যম্বুলেন্স। কিন্তু টানেলের ভেতর ৮১ মিনিট যাবত কি হচ্ছিলো?৩: প্রিন্সেস ডায়ানার আশঙ্কা এবং রহস্যজনক টেলিফোন বার্তা প্রিন্সেস ডায়ানা যখন তার ল্যান্ডমাইন নিষিদ্ধকরণ ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি প্রায়ই তিনি টেলিফোনে প্রাণনাশের হুমকি পেতেন। এমনই একটি ফোনকল আসে প্রিন্সেসের কাছে যখন তিনি ছিলেন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু সায়মন সিমন্সের সাথে। সায়মন বলেন, ডায়ানার কাছে ফোনটি এসেছিলো ইউকে এর কোন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে। ফোনে কিছুক্ষণ কথা বলার পর প্রিন্সেস ফোনটি এগিয়ে দেন সায়মনের কাছে। ফোনটি কানে লাগানোর পর সায়মন শুনতে পান “যে বিষয়ে তুমি কিছু জানোনা, সে ব্যাপারে নাক গলাতে এসোনা। কারণ তুমি ভালোভাবেই জানো, দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে।” ডায়ানার মৃত্যুর পর সায়মন এবিষয়ে আলোকপাত করেন।৪: অচল সার্ভেলেন্স ক্যামেরা আক্সিডেন্টের সময় প্রিন্সেস ডায়ানা এবং দোদি আল-ফায়েদ যাচ্ছিলেন দোদির সেন্ট্রাল প্যারিসের আ্যপার্টমেন্টে। যেখান থেকে তারা গাড়িতে উঠেছিলেন সেখান থেকে স্বল্প দুরত্বে ছিলো দোদির ফ্ল্যাট। কিন্তু সেই রাস্তা দিয়ে না গিয়ে ড্রাইভার হেনরি পল রাস্তা পরিবর্তন করে এমন রাস্তা দিয়ে যান যেখান দিয়ে দোদির ফ্ল্যাটে যাওয়া বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ধারণা করা হয় যে পাপারাজ্জিদের হাত থেকে বাঁচতে তারা ভিন্ন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। এই রাস্তায়ই ছিলো সেই টানেল যেখানে তাদের আক্সিডেন্ট হয়। সত্যিই সে রাতে কি হয়েছিলো, তা কখনোই হয়তোবা সামনে আসবে না।৫: হেনরি পল এবং একটি ফিয়াট গাড়ি সাধারণত আ্যক্সিডেন্টের জন্য দায়ী করা হয় ড্রাইভার হেনরি পল কে। আ্যলকোহলিক হেনরি পলের কারণেই নাকি মারা যান প্রিন্সেস এবং দোদি আল-ফায়েদ। কিন্তু হেনরির পরিবারের দাবি হেনরি ছিলেন নন আ্যলকোহলিক কর্তব্যনিষ্ঠ ড্রাইভার। তাছাড়া হেনরির ব্লাড স্যাম্পলেও মাত্রাতিরিক্ত আ্যলকোহল পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া সেই সাদা রঙের ফিয়াট উনো গাড়িটি যার সঙ্গে দোদির মার্সিডিজের সংঘর্ষ হয়েছিলো বলে দাবি করে প্রত্যক্ষদর্শীরা, যে গাড়ির কাচের টুকরো এবং টায়ারের ছাপ পাওয়া গেছে দুর্ঘটনাস্থলে সেই গাড়িটির কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে সেই গাড়িটি।যদিও আইনপ্রণয়নকারী সংস্থাগুলো বারবার জোড়গলায় প্রচার করেছে যে প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু একটি নিছক দুর্ঘটনা মাত্র।  কিন্তু আমাদের আশেপাশে থাকা তথ্যপ্রমাণগুলো বলে দেয় যে এটি ছিলো একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। প্রিন্সেসের মৃত্যু এমনই একটি অন্ধকার রহস্য যা হয়তোবা কখোনোই আলোর মুখ দেখবে না।

No comments:

Post a Comment