Thursday, May 24, 2018

এরিয়া ৫১ গোপন ও রহস্যময়!



এরিয়া ৫১- গোপন ও রহস্যময়!

এরিয়া ৫১ আমেরিকানদের চরম গোপনীয় ১টি সামরিক ঘাঁটি। আজ পর্যন্ত কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে এর ভিতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি। এই ঘাঁটির আসল কাজ কি সেটা জানতে চেয়ে আজও আমেরিকান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সঠিক উত্তর মেলেনি ।কেন এরিয়া ৫১ এতো গোপন?এটি একটি বিশাল সামরিক বিমান ঘাঁটি। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য পরীক্ষামূলক বিমান এবং অস্ত্র পদ্ধতি উন্নয়ন এবং পরীক্ষা।এটি সাধারণ বিমানঘাঁটি থেকে আলাদা। এরিয়া ৫১ এর ব্লুপ্রিন্টটি মার্কিন বিমান বাহিনীর একটি বিশাল প্রশিক্ষণ (NTTR নেভেদা টেস্ট এন্ড ট্রেনিং রেঞ্জ) কেন্দ্র। অস্থায়ী ভাবে একে বলা হয় নেইলস এয়ার ফোর্স রেঞ্জ (NAFR)। এই  ঘাঁটি পরিচালনা করে নেইলস এয়ার ফোর্স বেসের ৯৯ এয়ার বেস উইং। এই স্থানের চারদিকের আকাশ অন্য সবার জন্য নিষিদ্ধ, এই আকাশসীমা (R-4808N) হিসাবে পরিচিত। পাইলটরা এই এলাকার আকাশকে বলে “দি বক্স” অথবা “দি কনটেইনার”।

এরিয়া ৫১ এর অবস্থান ?"এরিয়া ৫১" এক রহস্যে ঘেরা নাম। এটা কোন প্রকৃতির সৃষ্টি রহস্য না বরং মানুষের সৃষ্ট সব থেকে রহস্যজনক স্থানগুলির মধ্যে একটি। এর আয়তন ২৬,০০০ বর্গকিলোমিটার। এটি পশ্চিমা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে এবং লাস ভেগাস থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিম রেকেল গ্রামের কাছে অবস্থিত। এটি গ্রুম হ্রদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত।এর নাম এরিয়া ৫১ হলেও এর অন্য অনেক গুলি নাম আছে যেমনঃ ড্রিম ল্যান্ড (Dream Land), প্যারাডাইস রেঞ্চ (Pradise Ranch), হোম বেস (Home Base), ওয়াটার টাউন স্ট্রিপ (Watertown Strip), গ্রুম লেক (Groom Lake) ইত্যাদি।এরিয়া ৫১ এর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা।এরিয়া ৫১ এর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা অনেক শক্তিশালী। এই বেসের আনুমানিক ১৫৫ মাইল উত্তর এবং উত্তর পূর্বকোনে ৯৪০০ ফুট উঁচু “বেলডে” নামক একটি পাহাড়ের চূড়ায় বিশাল একটি রাডার স্থাপনা আছে।ধারণা করা হয়, এটি আকাশ পথ নজরদারী রাডার ARSR 4 (Air Route Surveillance Radar)। এই ধরনের রাডার মার্কিন বিমান বাহিনী ব্যবহার করে। এটি শুধু একটি রাডারই নয় একসাথে অনেক গুলি রাডারের একটি নেটওর্য়াক ব্যাবস্থা। এই রকম আরো একটি রাডার আছে গ্রুম লেকের উওর দিকে আর একটি পাহাড়ের চুড়ায় মাটি থেকে প্রায় ৪৩০০ ফুট উপরে। এইগুলি সব স্বয়ংক্রিয়।এত সুরক্ষিত স্থান, নিরাপত্তাও সর্বাধুনিক। এর এলাকার চারপাশে কোন দেয়াল বা বেড়া নেই। শুধু আছে কয়েকটি সাইনবোর্ড। কিন্তু সবার অলক্ষ্যে কাজ করে অনেক প্রযুক্তি। যেমনঃ Mobile CC Camera, Motion detector (নড়াচড়া পর্যবেক্ষক), Laser detector (লেজার পর্যবেক্ষক), Sound detector (শব্দ পর্যবেক্ষক) আর সব থেকে আধুনিক Smell detector (ঘ্রান পর্যবেক্ষক)।এখানে অনেক উপরের নীতি-নির্ধারকদের অনুমতি বাদে প্রবেশ সম্পুর্ন নিষেধ। ঢুকলেই মৃত্যু অবধারিত। কেননা ক'দিন আগেও যে স্থানের কোন অস্তিত্ব ছিল না সেখানে কাগজ-কলমে সাধারণ আইন-কানুন মানা হয় না। তাই আদালতে কোন বিচার হবে না। মাঠেই আপনার বিচার, মাঠেই আপনার শাস্তি।কি কাজ হয় এরিয়া ৫১ এর ভেতরে?

এরিয়া ৫১ এর আশপাশের বাসিন্দাদের অনেকে অনেক রকম কথা বলেছে। তাদের অনেকের দাবী এরিয়া ৫১ এর আকাশে ফ্লাইং সসারের মত মত কিছু উড়তে তারা দেখেছেন। আবার অনেকেই নাকি এমন দ্রুতগতির বিমান উড়তে দেখেছেন যার গতি সাধারণ বিমান বা যুদ্ধবিমান কোনোটার সাথেই মিলে না।এসব বিতর্ককে আরও ঘনীভূত করেছেন এরিয়া ৫১ এ কর্মরত পদার্থ বিজ্ঞানী বব লেজার। এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, এরিয়া ৫১ এমন কিছু মৌলিক পদার্থ নিয়ে গবেষণা করা হয় যা আবিষ্কারের ঘোষণা এখনও দেওয়া হয় নি। তার মতে সুপারনোভা বা বাইনারি স্টার সিস্টেম থেকেই সম্ভবত একটি মৌল সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মাত্র ২.২ পাউন্ড  দ্বারা ৪৭টি ১০ মেগাটন হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করা যাবে।

ওখানে নাকি একটি টাইম মেশিন আছে। টাইম মেশিনে এই মৌলটি রাখা হলে টাইম মেশিনটি সময়কে স্থির করে রাখতে পারে। তারা নাকি সময় স্থির করে রাখার পরীক্ষা চালিয়ে সফলও হয়েছেন।তবে বব সবচেয়ে বড় বোমা ফাটান এই বলে সেখানে নাকি এলিয়েন দের নিজে ধ্বংস হয়ে যাওয়া এক ফ্লাইং সসার আছে। ওখানে ১টি এলিয়েনের শরীর ব্যবচ্ছেদ করে নাকি পাওয়া গেছে ঐ প্রাণীটি এসেছে রেটিকুলাম ৪ নামক জ্যোতিষ্ক থেকে। প্রাণীটির উচ্চতা সাড়ে তিন ফুট শরীর, রোমহীন কালো বড় বড় চোখ এবং কৃশকায় শরীর।তবে এতসব বিতর্কই শেষ নয়। এরিয়া ৫১ নিয়ে চলমান বিতর্কের সব চেয়ে বড়টি হল মানুষের চাঁদে যাওয়া নিয়ে নাটক। মানুষ চাঁদে গিয়েছে এ নিয়ে নাটকের কি আছে? আপনারা হয়ত তা বলবেন। কিন্তু দুনিয়াতে প্রচুর সন্দেহবাদী যাদের ধারণা আমেরিকানরা প্রথমে চাঁদে যায়নি। পুরো নাটকটি সাজানো হয়েছে এই এরিয়া ৫১ এর ভিতর।আসলে আমাদের যতটা জানানো হয় তততুকুই জানি। অদূর ভবিষ্যতে আমরা হয়তো আরও অনেক নতুন কিছু জানতে পারবো এরিয়া ৫১ নিয়ে। আমাদের আয়োজন ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ারের মাধ্যমে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

No comments:

Post a Comment